যথাযোগ্য মর্যাদায় মানবতাবাদী সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ১৫০তম জন্ম দিবস পালন।
নিজস্ব প্রতিবেদক,বাগনান
বর্তমান সমাজ জীবনে রন্ধ্রে রন্ধ্রে মূল্যবোধের চূড়ান্ত অবক্ষয় এক নিদারুণ বেদনাদায়ক বাস্তব ছবি পরিলক্ষিত হচ্ছে। অপসংস্কৃতির নোংরা স্রোতে শরৎচন্দ্র সহ সকল মনীষীর সৃষ্টি ও সাধনা বিস্মৃতির অন্তরালে তলিয়ে যাচ্ছে । আজ অসহায় মানুষের হাহাকার, নারীর চরম লাঞ্ছনা, দারিদ্র, বেকারী, জাতপাতের গোঁড়ামি, সাম্প্রদায়িক হানাহানির বিষবাষ্প আকাশ বাতাস ভারী করে তুলেছে।
আজকের এই সর্বাত্মক সংকটের সময়ে পার্থিব মানবতাবাদী সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মনীষা, জীবন ও সাহিত্যের যথাযথ চর্চার প্রয়োজনকে বিবেকবান সকল মানুষ স্বীকার করে। তাঁর সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ থেকে কিছু অমূল্য রত্ন সংগ্রহের উদ্দেশ্যে *শরৎচন্দ্র জন্মবার্ষিকী উদযাপন কমিটির উদ্যোগে ১৭ই সেপ্টেম্বর'২৫ সামতাবেড়ের বাসভবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় ১৫০তম জন্মদিবস* পালিত হয়।
মূল অনুষ্ঠানের আগে সকাল ১০টা থেকে অঙ্কন প্রতিযোগিতা, শরৎচন্দ্রের গল্পের কাহিনী অবলম্বনে "যেমন খুশি সাজো" প্রতিযোগিতা শুরু হয়।
"শরৎচন্দ্র জন্মবার্ষিকী উদযাপন কমিটি" আয়োজিত বিকেল ৪টায় কথাশিল্পীর পথিকৃতিতে মাল্যদান, সংগীত, আবৃত্তি ও মনোজ্ঞ আলোচনা শরৎচন্দ্রের বাসভবনকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দেয়।
উল্লেখ্য এই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন প্রাক্তন শিক্ষক আশীষ ব্যানার্জি, প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখেন এই কমিটির সম্পাদক অধ্যাপক ইমন কল্যাণ মিশ্র। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সারা বাংলা শরৎ জন্মবার্ষিকী কমিটির অন্যতম সদস্য বনমালী পন্ডা। প্রধান বক্তা বলেন- শরৎচন্দ্রের ১৫০তম জন্ম দিবস পালনের প্রাক্কালে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মূল্যবোধের চূড়ান্ত অবক্ষয় আজ সমগ্র মানবজাতিকে গভীর সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
একদিকে আত্মকেন্দ্রিকতা, স্বার্থপরতা অন্যদিকে নারীর চরম লাঞ্ছনা, দারিদ্র জাতপাতের গোড়ামী এই সমাজকে এক নিকষ অন্ধকারে নিমজ্জিত করছে। এইরকম সংকটময় পরিস্থিতিতে অপরাজেও সাহিত্যিক শরৎচন্দ্রের মনীষা,জীবন ও সাহিত্যচর্চা আমাদের এই ঘুন ধরা সমাজের কিছুটা হলেও প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করবে। উল্লেখ্য এই মহতী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ ডাক্তার বিশ্বনাথ পড়িয়া, শরৎচন্দ্রের প্রপৌত্র- জয় চট্টোপাধ্যায়, মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় বহু শিক্ষক অধ্যাপক ও শরৎচন্দ্রের অনুরাগী বৃন্দ।
অবশেষে এই কমিটির পরিবেশনায় শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ছোটগল্প "মেজদিদি" নাটকটি এলাকার মানুষের মনে গভীরভাবে ছাপ ফেলে।