সংবাদদাতা :
লড়াইটা ছিল একটা পিছিয়েপড়া সমাজের কয়েক হাজার পড়ুয়ার অধিকারের। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরে তাঁর সেই অধিকারের কথা নিয়ে সওয়াল করেন। জোর দাবি তোলেন। তাঁর দাবি অসংগত নয়, একটা ন্যায়সংগত অধিকার।সেই অধিকার আদায়ের নৈপথ্যে বীরভূমের মুরারই ব্লকের যুবক সাদেকুল ইসলাম। সে বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। সাধারণ মানুষের সমস্যা নিয়ে কয়েক বছর ধরে কাজ করছেন। ইতিমধ্যেই লকডাউনে আটকে পড়া শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করে প্রশংসা পেয়েছেন। এবার আরও বড় ভূমিকায় সাদেকুল ইসলাম।
সাচার কমিটির রিপোর্টের পর বাম আমলের ভেঙে পড়া সংখ্যালঘু শিক্ষার হাল নজরে আসে। রাজ্যে পালাবদলের পর তৃণমূল সরকার অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করে। সরকারি চাকরির পাশাপাশি উচ্চশিক্ষায় ওবিসিদের সংরক্ষণের আওতায় আনা হয়। উচ্চশিক্ষায় সংরক্ষণ নিয়ে বিল আনা হয় রাজ্য বিধানসভায়। ওবিসি(এ)-র জন্য দশ শতাংশএ আর ওবিসি (বি)-র জন্য সাত শতাংশ সংরক্ষণ থাকবে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই মানা হচ্ছিল না বলে দাবি ওঠে। গতবছর থেকে সেই লড়াইটা শুরু হয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন। সেটা সাদেকুল নবান্নেও ই-মেলে জানান। জয়েন্টের মাধ্যমে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তিতে সিট সংরক্ষণ কার্যকরে টালবাহানা চলছিল। নবান্ন,অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর,উচ্চশিক্ষার টেকনিক্যাল এডুকেশনের ডিরেক্টরকে বিষয়টি জানান।বারবার দাবি জানানোর পর অবশেষে রাজ্য জেইই এন্ট্রান্সের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আসন সংরক্ষণ সুনিশ্চিত হচ্ছে। ফলে রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত যত ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২০২০-তে মোট আসনের ২২২০টিতে অনগ্রসর শ্রেণীর (ওবিসি এ– বি) পড়ুয়ারা ভর্তি হতে পারবে বলে জানান সাদেকুল। তবে এসবের মধ্যে সাদেকুলের পাশে ছিলেন যাদবপুরের এক প্রাক্তনী যিনি জাপানে গবেষণারত বলে জানা গেছে। সাদেকুল জানান, এমনকী ডব্লিউবিইউটিটিইপি-এর উপাচার্য আমার লড়াই দেখেছেন। তিনি আমার দাবি মেনে নিয়ে গতবছরই বি.এডে আসন সংরক্ষণ কার্যকর করেন। সাদেকুল বলেন– দীর্ঘদিন ধরে ওবিসি পড়ুয়ারা তাদের ন্যায্য দাবি থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। নিজের অধিকার নিজেকে বুঝে নিতে হবে।একাধিকবার আমি অভিযোগ জানিয়েছি। সেই ফল দেরিতে হলেও পেলাম। দেখা যায় বিচ্ছিন্নভাবে কোনও কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আসন সংরক্ষণ দিলেও বিভিন্ন সময় ডি রিজার্ভ করে দেয়। ডি রিজার্ভ করারও পদ্ধতি আছে , কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেই পদ্ধতি মানেনি। কীভাবে দাবি জানানো সম্ভব হল? সাদেকুলের জবাব" প্রথমে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরে জানাই। অনগ্রসর দফতর ইউনিভার্সিটিকে জানায়।
ইউনিভার্সিটি আবার অনগ্রসর দফতরে বিষয়টি জানায়। এরপর আমি জানতে পারি। সিএম অফিসকে জানাই। এরপর নড়েচড়ে বসে। উচ্চশিক্ষা দফতর সিট বাড়ায়। আমি দিল্লিতে এআইসিটিই বোর্ড ও তার চেয়ারম্যানকে ফোনে অবহিত করি এবং মেইল করি। লম্বা পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়। আমি ওবিসি নিজেও ওবিসি শ্রেণিভুক্ত। তাই সমস্যাটা জানি। সংরক্ষণ মানা হলে বহু পড়ুয়ারা সুযোগ পাবে। সংখ্যালঘু কমিশনের সদস্য নাসিরুদ্দিন আহমেদ জানান" অনগ্রসর পড়ুয়ারা সংরক্ষিত আসনে ভর্তি হতে পারবে, আরও বেশি ছেলে মেয়ে উচ্চশিক্ষায় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হতে পারবে অবশ্যই এটা ভালো দিক "।