এবি বঙ্গনিউজ।
*
*ভেবে দেখলাম ন্যায্যতার বা ইনসাফের ভিত্তিতেই রাজনীতি করা উচিৎ এবং ন্যায্যতা, যথার্থতা, ন্যায়বিচার, সমদর্শিতা, সাম্যভাব, নিরপেক্ষতা বা ন্যায়নিষ্ঠতা আমরা যাই বলি না কেন বা যেভাবেই বলি না কেন, তা কেবল ধর্মীয় অনুশাসনে বাস্তবায়ন সম্ভব।
আমার আজকের এই লেখাটা মূলত একজন অনলাইন লেখকের একটা নোটের কমেন্ট্স।
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাঁরা একটু লেখা-পড়া শিখেই নিজেদেরকে অতি আধুনিক হিসেবে প্রতিষ্ঠাতে সব রকমের ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন।
যেমন অনলাইনে কিছু ইসলামবিরোধী লেখা পোস্ট করে জাতে উঠার প্রচেষ্টা।নিজের মনগড়া কিছু অযুক্তিক মতামত দিয়ে ইসলাম ধর্মের ধ্বংসসাধনের চেষ্টা করার অপচেষ্টা মাত্র।
আমি যেমন কোন রাজনীতির সাথে যুক্ত নয়, তেমন কোন মতাদর্শে ও বিশ্বাসী না।
আমি হয়ত ওনাদের মত ইসলাম বিরোধী শিক্ষায় শিক্ষিত না, তাই ওনাদের স্ব-ঘোষিত শিক্ষাও মেনে নিতে পারিনা। আপনারা যারা ইসলামী পণ্ডিত তাদের মত এত বেশি জানিনা বা এত গভীর জ্ঞান রাখি না।
ধর্ম সম্পর্কে খুব সামান্যই পড়েছি এবং এই তুচ্ছ জ্ঞান থেকে এটাই অনুমিত যে কেবল ধর্মীয় আইনের ভিত্তিতে দেশ বা সমাজ প্রচলিত হলে দেশে বা সমাজে কোন অশান্তি থাকবে না, যদি তা কেবল যথার্থ ভাবে বাস্তবায়ন হয়।*
*
প্রথমেই বলব, কেউ যদি বলে যে, সে ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতি পছন্দ করে না, এটা কেবলই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
এটা হতে পারে যখন কারো ধর্মীয় জ্ঞানের অপ্রতুলতা থাকে। অথবা ধর্মকে আঘাত করার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। উনাদের অনেককেই আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি বা অনেকের ব্যক্তিগত খবরাখবর রাখি।
এঁদের প্রায় সকলেই নিয়মিত মদ্যপানে অভ্যস্থ। নাইট ক্লাব, পানশালায় ও পার্টিতে যাতায়াত এদের নিত্য দিনের ব্যাপার।
এরা বোধ হয় ইসলাম বিরোধী এই জন্য যে যাতে কেউ এদেরকে আর মদ্য পানে বাঁধা না দেয়।
মদ পানে মাতাল হওয়াটা স্বাভাবিক ব্যাপার আর একজন মাতাল কি ভাবে যৌক্তিকতা, বুদ্ধিবৃত্তি বা যুক্তিসিদ্ধতার কথা বলবে? এই সব মাতাল আতেলরা ধর্মের সংজ্ঞা বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের সংজ্ঞাই জানে না।
অথচ ওরা তথাকথিত বুদ্ধিজীবী। আর কিছু বিবেকবর্জিত সক্রিয় অনলাইন পক্ষাবলম্বী আছেন যাঁরা কিছু না বুঝে না জানে তালি বাজিয়ে যাচ্ছেন। ফলে এই সব আতেলরা আরো ধৃষ্টতা পেয়ে যাচ্ছেন।*
*
উনাদের জানা উচিৎ, রাজনীতি ধর্মের নামে হয় না, হয় ধর্মীয় অনুশাসন বা নিয়ম-নীতির বাস্তবায়নের মাধ্যমে। তবে যদি কেউ কেবল রাজনৈতিক সফলতার জন্য ধর্মকে সামনে রেখে রাজনীতি করে, তাদের কথা ভিন্ন। ধর্ম জীবনের অংশ নয়; এটা জীবন ব্যবস্থা।
পবিত্র কোরআন ও সহিহ হাদিসে প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে সব ধরণের বা সব ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া আছে যাতে করে রান্না ঘর থেকে সংসদ পরিচালনায় কোন অসুবিধা না হতে হয়।
বাংলাদেশেও হিন্দুইজম প্রতিষ্ঠায় হিন্দু রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠিতি হয়েছে। "স্বাধীন বঙ্গভূমি আন্দোলন" ও "বঙ্গসেনা" নামে দুইটি রাজনৈতিক দল আছে বলে জানা যায়।* *ইন্ডিয়াতে মোট হিন্দু রাজনৈতিক দল হল এগারটা।
অবশ্যই মুসলমানদের মত হিন্দু, বৌদ্ধ ও খৃষ্টানদেরও সমান অধিকার আছে হিন্দুদল, বৌদ্ধদল বা খৃষ্টানদল গঠন করে এদেশে হিন্দুত্ব, বৌদ্ধত্ব বা খৃষ্টানত্ব কায়েম করার, যদি এই ধর্মসমূহ বিজ্ঞান ও মানবিকতার পরিপন্থী না হয়। একটা রাজনৈতিক দল টিকে থাকে সেই দলের সমর্থকদের সম্ভাব্য সংখ্যার উপর এবং এই সমার্থক সংখ্যা গঠিত হয় সেই রাজনৈতিক দলের লক্ষ-উদ্দেশ্য, কর্মপদ্ধতি ও কোন ভিত্তিতে তা পরিচালিত হবে তার উপর।
আমি হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে এত বেশি কিছু জানি না। তবে হিন্দু ধর্মের সাথে ইসলামের অনেক ক্ষেত্রে মিল আছে। একই ভাবে অন্যান্য ধর্মের জন্য সমান কথা।
একটা দেশে তখনই ধর্মীয় আইনের ভিত্তিতে শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে কেবল যদি সেই ধর্ম মানবতা, ন্যায়বিচার, সমদর্শিতা বা বৈষম্যহীন জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাতে যথার্থ সমৃদ্ধ। তবে সব চেয়ে বড় কথা হল, সে দেশের শিক্ষিত সমাজের ধর্ম সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞান থাকতে হবে। আজ আর তুলনা মূলক রাজনৈতিক বিশ্লেষণ নাই বা করলাম।*
*এদের যুক্তি হল, রাষ্ট্রের কোন ধর্ম হয়না কারণ রাষ্ট্র তো আর মানুষ নয়।
কী চমৎকার যুক্তি। রাষ্ট্রের ধর্ম হয়না কিন্তু রাষ্ট্রের নাগরিকদের তো ধর্ম হয়। আর সেই রাষ্ট্রের নাগরিকরা যদি তাদের মানসিক শান্তির জন্যই হোক আর পরকালের শান্তির জন্যই হোক কোন একটা রাষ্ট্র-ধর্ম প্রত্যাশা করে, তাতে সরকারের কি কিছু করার আছে? সরকার শুধু সধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে একটা সিদ্ধান্তে উপনিত হতে পারে। কেননা এটা গণতান্ত্রিক দেশ, এখানে জনগণই সংকট মীমাংসার দাবি রাখে*।
*
ইতিহাস থেকে আমরা জানতে পারি যে, কেবলমাত্র ধর্মহীনতাই সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, ব্যক্তি মূল্যবোধের অবক্ষয় তথা রাজনৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ত্বরাণিত করে। সৃষ্টিকর্তার অস্থিত্ব ও পরকালের ভয়েই কেবল অধিকাংশ মানুষ লোকচক্ষুর অন্তরালে অন্যায় থেকে বিরত থাকে।
আমরা যারা, অন্য ধর্মের ব্যাপারে বলছি না, ইসলামের বিরোধিতা করতে যতটা না অান্তরিক, এতটা আন্তরিক যদি ইসলাম গবেষণায় হতাম, তাহলে হয়ত ধর্ম নিয়ে কোন রক্তক্ষয়ী সঙ্ঘাত হত না।